‘অগ্রপথিক’ ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মাসিক প্রকাশনা। গত ২৬ বছর ধরে ম্যগাজিনটির প্রকাশনা অব্যাহত আছে। এতে শিল্প-সাহিত্য, দর্শন-বিজ্ঞান, সমাজ ও অর্থনীতি, ধর্ম ও রাজনীতি, ইতিহাস-ঐতিহ্য, ভ্রমণ ইত্যাদি সকল বিষয়ের ওপর জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে লেখকদের লেখা স্থান পায়। তবে যেহেতু প্রকাশনাটি ইসলাম মূল্যবোধকে উজ্জীবিত ও শানিত করার লক্ষ্যে পরিচালিত-তাই এতে মুসলিম বিশ্বের বিষয়াবলীর ওপর বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়।
‘অগ্রপথিক’ জুন/ ২০১০ সংখ্যাটিতে প্রবন্ধ ছাপা হয়েছে-মুসলিম মনীষীদের জীবনী বিষয়ক ০২ টি, ধর্ম বিষয়ক ০৫ টি, সাহিত্য বিষয়ক ০২টি। কবিতা ছাপা হয়েছে-সাতটি। মোহাম্মদ সা’দাত আলী প্রবন্ধ লিখেছেন জ্ঞান তাপস ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহকে নিয়ে। ড. মুহাম্মদ আব্দুল মুনিম খান লিখেছেন ‘ইসলামে চরমপন্থার স্থান নেই’ প্রবন্ধটি। প্রবন্ধকার লিখেছেন, সিরাতুল মোস্তাকিম বা সহজ-সরলতার পথ হলো ইসলামের পথ। সেই পথ নিরন্তর শান্তির পথ। তাই ইসলামে চরমপন্থী হওয়ার সুযোগ নেই। সন্ত্রাসী কার্যকলাপ, ফেতনা-ফ্যাসাদ ও দাঙ্গা-হাঙ্গামা করার সুযোগ নেই, নৈরাজ্য ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির মাধ্যমে সামাজিক শান্তি বিনষ্ট করার সুযোগ নেই। কাজেই এ বিষয়ের ওপর লিখিত প্রবন্ধটি অত্যন্ত সময়োচিত। আরেকটি প্রবন্ধ সবার কাছে গ্রহণীয় হতে পারে। সেটি হলো, অবু হেনা মোস্তফা কামালের লেখা ‘কুরআনুল করিমের বৈজ্ঞানিক নিদর্শন: বিজ্ঞানীদের বিস্ময়’। এছাড়া প্রবন্ধ লিখেছেন সরকার রফিক তার প্রবন্ধের নাম মিরাজ ও বিজ্ঞান। মওলানা মুফতি মহিউদ্দিন কাছেম লিখেছেন, নামাযের সুন্নত তরিকা নামক একটি প্রবন্ধ। সাহিত্য বিষয়ক ০২টি প্রবন্ধের একটি অনুবাদ। অনুবাদ হলেও প্রবন্ধটি বেশ আকর্ষণীয়। গাজী সাইফুল ইসলাম অনুবাদ করেছেন- কবি শামসুদ্দিস মুহাম্মদ হাফিজের ৪২টি রুবাইয়াৎ। হাফিজের জীবনের ওপর আলোকপাত করার পাশাপাশি রুবাইয়াৎগুলো অনুবাদ করেছেন। বেশিরভাগ রুবাইয়াতের অনুবাদই সুখপাঠ্য। যেমন- ৯ নং রুবাইতের অনুবাদ তুলে ধরছি:
‘প্রদীপের গল্প অমি কীভাবে বলতে পারি?
ভাঙা হৃদয়ের তো নরকেই কাটে কাল
কীভাবে অমি খুঁজে পাব ওহ দুঃখ তোমার
অন্যে যখন সেখানে কেটেছে অশ্রুর খাল।’
১২ নং রুবাইতের অনুবাদটিও তুলে ধরার ইচ্ছে নিবারণ করতে পারছি না:
‘সকল সম্পদেরই উদ্দেশ্য নয় অত্যাচার
সকল আনন্দই বাধ্য নয় আইন মানার;
এমনকি সাত হাজার বছরের আনন্দ
সমান মাত্র সাতটি দিনের বেদনার।’
বোঝাই যায় আক্ষরিক অনুবাদ এগুলো নয়। ভাবানুবাদ। গাজী সাইফুল ইসলাম অনুবাদ করেছেন ইংরেজি থেকে। অশা করি তিনি অমাদের ফার্সি ভাষার সাহিত্যকর্মের অরও অনুবাদ উপহার দেবেন।
এ সংখ্যায় যারা কবিতা লিখেছেন তারা হলেন, আব্দুল হালিম খাঁ, কুদরত-এ খোদা, বেগম রাজিয়া হোসাইন, জাহানারা বেগম, আবুল হোসেন আজাদ, তমসুর হোসেন ও আবুল হিসাম আকন্দ। কবিদের মধ্যে প্রথম তিনজনের কবিতা নিয়মিতই পাওয়া যায় অগ্রপথিকের পাতায়। সেই ছোট বেলা থেকে অব্দুল হালিম খাঁনের কবিতার সঙ্গে পরিচিত হওয়ার সুবাদে যখনই পাই তাঁর কবিতা পড়ি। কিন্তু গতানুগতিকতার বাইরে তিনি যেতে পারলেন না। কবিদের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বলছি, এ সংখ্যায় ছাপা সব কবিতাই মামুলি বিষয় ও বক্তব্যের কারণে সুখপাঠ্য ও অকর্ষণীয় হতে পারেনি।
শেখ দয়াল
৮৩/ক আম বাগান
(দ্বিতীয় তলা)
নয়াটোলা, মগবাজার,ঢাকা।
Mobile: 01553480140